1. dailybanglard@gmail.com : দৈনিক বাংলার দিগন্ত : দৈনিক বাংলার দিগন্ত
  2. info@www.dailybanglardigant.online : দৈনিক বাংলার দিগন্ত :
মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩০ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "দৈনিক বাংলার দিগন্ত" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।
শিরোনাম :
প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত অত্যন্ত ৩,দগ্ধ ৩০ কুষ্টিয়ায় সেতু সংস্কারের ৬৫ লক্ষ টাকার কাজ সিডিউল মোতাবেক ও সরকারি নীতিমালা মেনে শেষ করেছেন সড়ক জনপদ কুষ্টিয়া জেলা সদর উপজেলা বিএনপির তরুণ নেতা হাজী মোঃ জয়নাল আবেদিন প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পেতে চাই উপজেলা বাসি ধোবাউড়ায় থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদসহ আটক ০১ ময়মনসিংহের তারাকান্দায় বাস ও পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত আত্মসমর্পণকারী কেএনএফ সদস্যদের পরিবারের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী লালমনিরহাটে বাড়ছে পানি, পাঁচ উপজেলায় হতে পারে বন্যা সীতাকুণ্ডে ‘রাইজঅন’ শো রুম এর শুভ উদ্বোধন সম্পন্ন বারহাট্টা চিরুনি অভিযানে পাঁচজন আটক আদিতমারীতে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ; আহত ২ !

গল্পঃ বাবা আমার পৃথিবী কবি/লেখকঃ মাসুদ রানা ইরাক প্রবাসী 

  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

গল্পঃ বাবা আমার পৃথিবী
কবি/লেখকঃ মাসুদ রানা ইরাক প্রবাসী

আমার নাম সাবিহা। আমি এই গল্পটা লিখছি আমার বাবাকে নিয়ে। আমার কাছে বাবা শুধু একজন মানুষ না—তিনি আমার পৃথিবী, আমার সমস্ত সুখ, আমার আশ্রয়। আমার বাবা একজন সাধারণ মানুষ। গ্রামের একটি ছোটখাটো বাজারে একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি হালকা খাওয়া-দাওয়া করে দোকানে বসে থাকেন। রোদ-বৃষ্টি, ঠান্ডা-গরম কোনো কিছুই থামাতে পারে না তাকে। আমি অনেক সময় ভাবি, এত কষ্ট তিনি কীভাবে সহ্য করেন?

বাবা খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠেন। তখন পাখিরাও ঠিকমতো ডাকতে শুরু করেনি। আম্মা ঘুমাচ্ছেন, আমিও। কিন্তু বাবার সেই পায়ের ধ্বনি আমি টের পাই। এক গ্লাস পানি খেয়ে, নামাজ পড়ে, একটু ভাত খেয়ে বাবা বেরিয়ে পড়েন।বাবার গায়ে একটাও অলংকার নেই, দামি ঘড়ি নেই, মোবাইলটাও খুব পুরোনো। তবু তিনি সবকিছুর চেয়ে দামী। কারণ তিনি আমাদের পরিবারের স্বপ্ন বয়ে নিয়ে চলেছেন। আমার স্কুলের বেতন হোক, ছোট ভাইয়ের বই হোক, আম্মার ওষুধ হোক—সবকিছুর পেছনে বাবার ঘাম জড়িয়ে আছে।

অনেক সময় আমরা তাকে বুঝি না। আমরা চাই নতুন জামা, ভালো খাবার, কোথাও বেড়াতে যাওয়া। কিন্তু বাবা কোনোদিন না বলেন না। শুধু বলেন, “আল্লাহ ভরসা, দেখা যাক কী করা যায়।”তারপর চুপচাপ নিজের প্রয়োজনে কষ্ট করে আমাদের চাহিদা মেটান।আমার বাবা খুব সহজ-সরল মানুষ। কারও সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন না। পাড়া-প্রতিবেশী সবাই তাকে খুব সম্মান করেন। কেউ কোনো বিপদে পড়লে আগে বাবার কাছেই আসে। তিনি যতটা পারেন, সাহায্য করেন।

একদিন স্কুলে শিক্ষক বললেন, “তোমার জীবনের প্রিয় মানুষ নিয়ে রচনা লিখো।”সবাই মা, দাদা, ভাইবোন লিখলো। আমি লিখেছিলাম—”বাবা আমার পৃথিবী।”রচনাটা পড়ে আমাদের ক্লাস টিচারের চোখে জল এসে গিয়েছিল। উনি বলেছিলেন, “তোমার বাবাকে জানাও, তিনি একজন সত্যিকারের নায়ক।”

একদিন ঈদের আগে আমার ছোট ভাই লাল রঙের জুতা চেয়েছিল। দোকানে দাম একটু বেশি। আম্মা বলেছিল, “এটা এখন নাওয়া যাবে না।” কিন্তু ঈদের দিন সকালে দেখি সেই জুতা ছোট ভাইয়ের পায়ে! আমি অবাক হয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, “বাবা, কীভাবে কিনলে?” বাবা শুধু বললেন, “আল্লাহ মেহেরবান, একটু কম খেয়েছি, চলবে।”বাবা নিজে কখনো কিছু চান না। আমাদের ভালো রাখতে গিয়ে তিনি নিজের প্রয়োজন ভুলে যান। আমার মনে পড়ে, একবার বাবা খুব জ্বরে পড়েছিলেন। কিন্তু তবুও দোকানে গিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম, “বাবা, আজ না গেলেই হয়!” কিন্তু তিনি বলেছিলেন, “না গেলে কাল তোমাদের খাওয়াবো কী?”

আমি তখন বুঝেছিলাম—এই মানুষটা শুধুই আমার বাবা না, তিনি একজন যোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করছেন, কিন্তু অস্ত্র দিয়ে নয়—ভালোবাসা, দায়িত্ব আর ত্যাগ দিয়ে। আমার স্বপ্ন, আমি বড় হয়ে একটা ভালো চাকরি করবো। তখন বাবাকে আর দোকানে যেতে দেবো না। বলবো, “বাবা, এবার তুমি একটু বিশ্রাম নাও। এখন আমি তোমার দায়িত্ব নিই।” আমি জানি, সেদিন বাবা নিশ্চয়ই হাসবেন। কিন্তু সেই হাসির পেছনেও থাকবে অনেক দিনের কষ্টের ছাপ।

আরও একটা কথা বলি—বাবা কখনো কাঁদেন না। কিন্তু একবার আমি স্কুলে প্রথম হয়ে বাবাকে বললাম, “বাবা, আমি তোমার মুখ উজ্জ্বল করলাম।” তখন দেখলাম বাবার চোখে পানি। তিনি শুধু বললেন, “আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার তুমি।”এই কথাটাই আমার হৃদয়ে লেগে আছে। বাবা শুধু খাওয়ান, পড়ান, কিনে দেন না—তিনি বিশ্বাস দেন, ভালোবাসেন, গড়ে তোলেন। তিনি আমার আত্মবিশ্বাস।

আজও আমি যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, তখন বাবার কাছে যাই। তিনি খুব শান্তভাবে বলেন, “মন পরিষ্কার থাকলে আল্লাহ ভালো কিছুই দিবে।” এই কথা আমার শক্তি। অনেকেই বলে, ‘বাবা দূরে থাকে’, ‘বাবা ব্যস্ত’, ‘বাবা কথা বলেন না বেশি’। কিন্তু আমার বাবা আমাকে প্রতিদিন বলেই—“বাবা, পড়াশোনা ঠিকমতো করিস, কিছু হলে আমাকে বলিস, আমি আছি।”

এই ‘আমি আছি’ কথাটাই যেন আমার সবচেয়ে বড় ভরসা। এই পৃথিবীতে অনেক ধনী লোক আছে, অনেক বড় অফিসার আছে, কিন্তু আমার চোখে আমার বাবা সবচেয়ে ধনী—কারণ তাঁর ভালোবাসা, তাঁর ত্যাগ, আর তাঁর হাসি, এসব কিছুর দাম টাকা দিয়ে মাপা যায় না। সবশেষে বলি,বাবা আমার মানিক রতন,বাবা ছাড়া আমার বুক ফাঁকা। বাবা আছেন বলেই আকাশটা নীল,বাবার ছায়া মানেই শান্তির পাহাড়। হয়তো জীবনে আরও অনেক কিছু আসবে, যাবে। কিন্তু আমার পৃথিবীর কেন্দ্রে সব সময় থাকবে একজন—আমার বাবা।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট