বান্দরবানে ৬ নং ওয়ার্ড বনরূপা পাড়ায় কিশোর গ্যাং সন্ত্রাসীদের হামলা
এলেক্স বড়ুয়া
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি
বান্দরবানে শ্রমজীবী যুবকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা: কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
বান্দরবান;
বান্দরবান সদর উপজেলার বনরুপা এলাকায় নির্মম সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন মোঃ মামুনুর রশিদ (২৭) নামের এক শ্রমজীবী যুবক। তিনি বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ক্যান্টিনে মেসিয়ারি হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং সম্প্রতি এ এলাকায় কাজের সূত্রে অবস্থান করছিলেন।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ মে রাত ৯টার দিকে ক্যান্টিনের কাজ শেষে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে বনরুপা ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র সংলগ্ন রাস্তায় অজ্ঞাতনামা দুই ব্যক্তি তার গতিরোধ করে মোবাইল আছে কিনা জানতে চায়। তিনি মোবাইল না থাকার কথা বললেও, তারা জোরপূর্বকভাবে তার প্যান্টের পকেটে থাকা Redmi Note 8 মডেলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে মারধর করে গুরুতর জখম করে।
ঘটনাটি ঘটে বনরুপা ২ নম্বর গলির পাশে অবস্থিত বাইশ পরিবার নামক একটি মুদির দোকানের সামনে। ভুক্তভোগী মামুনুর রশিদ জানান, হামলার সময় তিনি আশপাশে থাকা দোকানদারের কাছে সাহায্য চাইলে দোকানদার নিরাপত্তাজনিত ভয়ের কারণে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাননি। এতে করে হামলাকারীরা আরও সাহস পেয়ে তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করে এবং মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়।
পরে তিনি নিজে টমটমযোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফিরে আসেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে ক্যান্টিন মালিক বাবুল তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মামুনুর রশিদ থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ গ্রহণের পর তদন্তে এবং ভুক্তভোগীকে ছবি দেখিয়ে চিহ্নিত করার ভিত্তিতে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে সন্দেহ করা হচ্ছে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের:
১. সিহাব – পিতা: আনোয়ার হোসেন মিল্টন
২. তামীম – পিতা: দেলোয়ার (ড্রাইভার)
৩. আবছার – শালা: জাহাঙ্গীর
৪. সুমন – পিতা: শুক্কুর
৫. বাবু – পিতা: ইউসুফ
৬. বিধান
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ব্যক্তিরা পূর্বেও বনরুপা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন এবং বর্তমানে একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে সক্রিয় রয়েছে। এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস ও দস্যুবৃত্তির সঙ্গে এই গ্যাং জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
বনরুপা এলাকা দীর্ঘদিন ধরে অপরাধীদের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠায় সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রশাসনের প্রতি দাবী, দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।