1. dailybanglard@gmail.com : দৈনিক বাংলার দিগন্ত : দৈনিক বাংলার দিগন্ত
  2. info@www.dailybanglardigant.online : দৈনিক বাংলার দিগন্ত :
বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
জরুরী সাংবাদিক নিয়োগ চলছে আপনার কাছে একটি দুর্দান্ত সুযোগ! "দৈনিক বাংলার দিগন্ত" সংবাদপত্রে জরুরী ভিত্তিতে সাংবাদিক নিয়োগ চলছে।
শিরোনাম :
প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত অত্যন্ত ৩,দগ্ধ ৩০ কুষ্টিয়ায় সেতু সংস্কারের ৬৫ লক্ষ টাকার কাজ সিডিউল মোতাবেক ও সরকারি নীতিমালা মেনে শেষ করেছেন সড়ক জনপদ কুষ্টিয়া জেলা সদর উপজেলা বিএনপির তরুণ নেতা হাজী মোঃ জয়নাল আবেদিন প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পেতে চাই উপজেলা বাসি ধোবাউড়ায় থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদসহ আটক ০১ ময়মনসিংহের তারাকান্দায় বাস ও পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত আত্মসমর্পণকারী কেএনএফ সদস্যদের পরিবারের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী লালমনিরহাটে বাড়ছে পানি, পাঁচ উপজেলায় হতে পারে বন্যা সীতাকুণ্ডে ‘রাইজঅন’ শো রুম এর শুভ উদ্বোধন সম্পন্ন বারহাট্টা চিরুনি অভিযানে পাঁচজন আটক আদিতমারীতে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ; আহত ২ !

গদ্য: রক্তে লেখা দ্বিতীয় স্বাধীনতা সুমাইয়া তানজিম বিনতে মাসুদ

  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৪ বার পড়া হয়েছে

গদ্য: রক্তে লেখা দ্বিতীয় স্বাধীনতা
সুমাইয়া তানজিম বিনতে মাসুদ

রাষ্ট্র যখন স্বাধীন হয়, সে একবার নয়, বারবার পরীক্ষিত হয়, সময়ের নিষ্ঠুর মঞ্চে, শাসকের চোখে, জনগণের রক্তে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা হয়েছিলো গুলির শব্দ আর শহীদের বুক ফাটা আর্তনাদে। ইতিহাসে লেখা হয়েছিল, আমরা স্বাধীন। কিন্তু স্বাধীনতা শব্দটা তো কেবল ভূখণ্ডের দখল নয়, সেটা আত্মমর্যাদার প্রশ্ন, প্রশ্ন রাষ্ট্রীয় ন্যায়বিচারের, সামাজিক মর্যাদার, আর মানুষের চিন্তার স্বাধীনতার। সেই অর্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দ্বিতীয়বার ঝরেছিলো জুলাইয়ের তপ্ত রাজপথে, শহীদের রক্তে, জাতির ঘুম ভাঙা ক্রোধে।

জুলাই ছিলো উত্তপ্ত। আকাশও যেন দমবন্ধ হয়ে ছিলো, বাতাসে ধোঁয়া নয়, প্রতিজ্ঞা ঘুরে বেড়াতো। রাস্তায় নামে মানুষ, ছাত্র, কবি, শ্রমিক, মা, প্রেমিক, বেকার, শিক্ষক, এমনকি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানও। তারা বলেছিলো, আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক, অথচ আজ রাষ্ট্র আমাদের নিজস্ব ঘরে পরবাসী বানিয়েছে। তারা বলেছিলো, আমরা চাকরি চাই না, চাই সম্মান, চাই ন্যায্যতা, চাই সেই বাংলাদেশ, যেখানে জন্মসূত্র নয়, যোগ্যতা হবে পরিচয়ের প্রথম শব্দ। কিন্তু যারা ক্ষমতায় ছিলো, তারা এই প্রশ্ন শুনতে চায়নি। তারা প্রশ্নকারীদের জন্য বানিয়ে ফেলেছিলো একটা শব্দ, “রাজাকার”।

হ্যাঁ, এই পবিত্র শব্দটি, যা একদিন একজন বিশ্বাসঘাতকের মুখ চিহ্নিত করেছিলো, সেই শব্দই এখন ছুড়ে দেওয়া হচ্ছিলো সাধারণ ছাত্রদের মুখে। এ যেন ইতিহাসকে উল্টে দিয়ে, জাতিকে গালি দেওয়ার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। যাদের হাতে ছিলো রাষ্ট্রের চাবি, তারা নিজেরাই ভুলে গিয়েছিলো দরজাটা আসলে কার জন্য খোলা ছিল। জনতার এই চিৎকার ছিল রাষ্ট্রের চোখে কাঁটা। তাই তারা প্রতিরোধ করলো কৌশলে, প্রথমে মিডিয়া বন্ধ, তারপর ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, সত্য কখনো অফলাইনে যায় না।

এক সময় আসে যখন সত্য কেবল যুক্তি চায় না, চায় রক্ত। সেই রক্ত নাম লিখেছিলো আবু সাঈদের নামে। এক যুবক, এক স্বপ্নবান চোখ, এক সাহসী বুক, যে বলেছিল, আমরা রাজাকার নই, আমরা বাংলা মায়ের সন্তান। সেই বুকে গুলি চলে, আরেকটি শহীদ জন্ম নেয়, একেকটি ব্যানারে জেগে ওঠে তার ছবি, দেয়ালে দেয়ালে ছড়িয়ে পড়ে তার রক্তমাখা নাম। রাষ্ট্র ভেবেছিলো, মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে থামাবে বিদ্রোহ, অথচ মৃত্যুই হয়ে উঠলো বিদ্রোহের বীজ। আবু সাঈদ ছিলো না একজন, সে ছিল একটি প্রজন্মের প্রতীক, যে বলে, স্বাধীনতার নামে আর একটিও মিথ্যা মেনে নেবো না।

সেই জুলাই, প্রতিদিন যেটা ছিলো যেন একেকটা ১৯৭১, ব্যারিকেড গড়ে ওঠে, ব্যানার উড়ে, লাঠিচার্জ হয়, অন্ধকার নামে, কিন্তু চোখের আগুন নিভে না। ছাত্ররা পত্রিকার পাতায় শ্লোগান লেখে, কবিরা ব্যর্থ রাষ্ট্রের মুখোশ খুলে দেয় কবিতায়, আর মােরা রাতে সন্তানকে ঘুম পাড়াই এই বলে, বীর হ, যেন কেউ তোকে আর রাজাকার না বলে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, সব শহর একসঙ্গে জেগে ওঠে, কোনো আলাদা দলের ব্যানারে নয়, জাতির সম্মিলিত রক্তের সুরে। একটানা তিন সপ্তাহ, পুরো জাতি ইন্টারনেটবিহীন এক রক্তাক্ত নীরবতা ভেঙে দিয়েছিলো কণ্ঠের কাঁপন দিয়ে।

৫ আগস্ট। ঠিক সেইদিন, যখন মনে হচ্ছিলো রাতটা কখনো শেষ হবে না, রাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, কোটা সংস্কার করা হবে, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে থাকা ‘রাজাকার’ শব্দ ব্যবহারের নিন্দা জানানো হবে, সরকার নিজেদের পদে পরিবর্তন আনবে। খবর ছড়ায় মুখে মুখে, কারণ তখনো ইন্টারনেট বন্ধ। তবুও, স্বাধীনতার বার্তা কেবল মোবাইলে আসে না, আসে মানুষের চোখে, কান্নায়, চিৎকারে, পতাকার নীরব উল্লাসে।

এ যেন এক অসমাপ্ত ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায়, যেখানে জনগণ ফের লেখক হয়েছিলো, কলম ছিলো ব্যানার, কালি ছিল রক্ত। বাংলাদেশের মানচিত্র সেদিন আবারও অশ্রুতে ধুয়ে নতুন করে আঁকা হয়েছিল, এইবার স্বাধীনতা কাগজে নয়, মাটির গন্ধে লেখা হয়েছিলো।

আজ সেই আন্দোলনকে কেউ কেউ নাম দেয় কোটাবিরোধী, কেউ বলে ছাত্র-আন্দোলন, কেউ বলে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। কিন্তু যারা দেখেছে, যারা হেঁটেছে রক্তাক্ত রাস্তায়, যারা হারিয়েছে বন্ধু, যারা ছিলো সামনে, তারা জানে, এটি ছিল বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ।

তারা জানে, আবু সাঈদ কেবল শহীদ নয়, সে একটি অধ্যায়ের নাম, যেটি ইতিহাস চুপ করে কখনো ভুলে যেতে পারবে না।তারা জানে, জুলাই মাস ক্যালেন্ডারের পৃষ্ঠা নয়, এটা একটি জাতির ঘুম ভাঙার ক্ষণ।তারা জানে, স্বাধীনতা একবার আসে না, যতবার মানুষ নিঃস্ব হয়, ততবার তাকে ছিনিয়ে আনতে হয় রক্ত দিয়ে।আর তারা জানে, এই দেশ একদিন ফের বলবে, স্বাধীনতা মানে শুধু পতাকা নয়, মানে, মানুষের সম্মান।

জুলাই বিপ্লবের সব শহীদদের প্রতি শপথ, শ্রদ্ধা ও সজীব স্মরণ।এই গল্প কেউ লিখে দেয় না, এই গল্প রক্ত লিখে যায়,আর সেই লেখা মুছে ফেলার ক্ষমতা কোনো রাষ্ট্রের থাকে না।

এই ছিলো জুলাই। এই ছিলো বাংলাদেশ। এই ছিলো বাঙালির বিজয়।

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত -২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট