কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে আওয়ামী লীগপন্থী দুর্নীতিবাজ চক্রের নিয়োগ বানিজ্য ও অনিয়মের প্রতিবেদন

কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি

২০২১ সালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. মোহা: দেলদার হোসেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে নিয়োগের একটি সার্কুলার প্রকাশ করেন। শুরু থেকেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কলেজ সভার কার্যবিবরণীতে স্পষ্টভাবে “নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করা হলো” বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ সেই রেজুলেশন গোপন রেখে, বাতিল হওয়া সার্কুলারের আওতায় গোপনে ভাইভা পরীক্ষার আয়োজনের অপচেষ্টা চলছে। এটি আওয়ামী লীগের একদল সুবিধাভোগী ব্যক্তির ষড়যন্ত্রমূলক পুনর্বহালের অংশ। এই ষড়যন্ত্রের অন্যতম কারিগর ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কুষ্টিয়ার স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির হোতা ডা. এসএম মুসতানজিদ। তিনি তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ লোক মোঃ মশিউর রহমান এবং মোঃ মাজহারুল ইসলাম-কে বর্তমান অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান-কে ব্যবহার করে ২০২১ সালের বাতিল হওয়া নিয়োগ সার্কুলারের আওতায় নিয়োগ দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন। দ্রুত এই অনিয়ম বন্ধ করা না হলে একপক্ষের লোকজন অবৈধভাবে সরকারি চাকরি দখল করবে। মোঃ মশিউর রহমান ও মোঃ মাজহারুল ইসলাম উভয়েই ল্যাব এটেনডেন্ট (আউটসোর্সিং) পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষের প্রভাবের মাধ্যমে অবৈধভাবে কম্পিউটার অপারেটর পদে দায়িত্ব পালন করছেন এবং নিয়োগ সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র নিজেদের দখলে রেখেছেন। মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ (সহযোগী অধ্যাপক, প্যাথলজি বিভাগ) তাদের সহযোগী হয়ে অফিসের ভল্ট রুম খুলে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্রে অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এ কাজে মোঃ জামান আহমেদ (উচ্চমান সহকারী)-ও সক্রিয়ভাবে জড়িত। ২০২১ সালের রিটেন পরীক্ষার সময় পপি খাতুন (লাইব্রেরিয়ান), মোঃ মশিউর রহমান এবং মোঃ মাজহারুল ইসলামকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করতে সহযোগিতা করেন। তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কলেজের শিক্ষক আফসানা জান্নাত (প্রভাষক, বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ), মোঃ নাহিদুল ইসলাম (সহযোগী অধ্যাপক) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, সহ আরও অনেকে। অভিযোগ আছে যে, এই প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনও হয়েছে। পাশাপাশি পপি খাতুন চাকরির স্থায়ীকরণের স্বার্থে নিয়োগ বানিজ্যে সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছেন।

বর্তমান অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, যিনি রাজশাহী স্বাচীপ এর এক শীর্ষ নেতা, তিনি কলেজের দায়িত্ব পালনের বদলে রাজশাহীতে ব্যক্তিগত ক্লিনিকে রোগী দেখেন। এ সুযোগে আওয়ামীপন্থী এই দুর্নীতিবাজ চক্র কলেজের নিয়োগ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়মবহির্ভূত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. মোহা: দেলদার হোসেন ও ডা. এসএম মুসতানজিদ, মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ মাজহারুল ইসলাম,ও পপি খাতুনকে নিয়োগ দিতে গোপনে তৎপর রয়েছেন। বাতিল হওয়া সার্কুলারের নিয়োগ আবারও অনুমোদনের অপচেষ্টায় এই চক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছেন প্রধান সহকারী মো. জামান আহমেদ, ডা. সিরাজুম মুনির (কার্ডিওলজি বিভাগ), ডা. মো. খসরুজ্জামান (গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ), এবং ডা. মো. শহিদুল ইসলাম (নিউরোলজি বিভাগ)।

দাবি জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহল
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে —যে এই আওয়ামী লীগপন্থী দুর্নীতিবাজ চক্রের পুনর্বহাল এবং নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের ষড়যন্ত্র দ্রুত বন্ধ করে, মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ মাজহারুল ইসলাম, পপি খাতুন, এবং সংশ্লিষ্টদের কার্যক্রম তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। অসদুপায় নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়ায় বাতিল হওয়ার পরও আবার সেই নিয়োগের ভাইবা পরীক্ষা ০২/০৫/২০২৫ ইং তারিখ নেওয়া হয়েছে যার সাথে সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এক হয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বৈধতা দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে যা স্থানীয় জনগন প্রতিবাদ করছে এবং উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃস্টি আকর্যন করছে এবং এই নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় সার্কুলার দিয়ে নিয়োগের জোর দাবী জানাচ্ছে।